পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক সহ বেইলি ব্রিজ ভেঙে খালে পড়ে যাওয়ায় দুই উপজেলার কয়েক হাজার মানুষের জনদুর্ভোগের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইন্দুরকানি ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার কলারন-সন্যাসী-মোরেলগঞ্জ-মোংলা-শরণখোলা রুটসহ একাধিক এলাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় স্থানীয়দের কপালে চিন্তার ভাজ। অতি দ্রুত ব্রিজ মেরামত করে সাধারন মানুষের চলাচলের উপযোগী করে তোলার দাবী এলাকাবাসীর।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে শুক্রবার ভোর রাত ৪টার দিকে উপজেলার চন্ডিপুরে মালবাড়ী এলাকায় প্রায় ২৭ টন কয়লা নিয়ে একটি ট্রাক ব্রিজটি পার হচ্ছিল। কিন্তু সেতুটি অতিরিক্ত ওজন সহ্য করতে না পেরে হঠাৎ ভেঙে পড়ে যায় এবং ট্রাকটি খালের পানিতে তলিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই ট্রাকচালক ও সহকারী পালিয়ে যায়।
ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর থেকে পুরো রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে ইন্দুরকানী, কলারন, সন্যাসী, মোড়েলগঞ্জ, মোংলা, শরণখোলা এলাকার হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। শিক্ষার্থী, রোগী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ সব শ্রেণির মানুষ এখন চরম ভোগান্তির শিকার। স্থানীয়রা বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় পুরোপুরি অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বহুদিন ধরেই ব্রিজটির অবস্থা নাজুক ছিল। সেতুর গায়ে সতর্কতামূলকভাবে পাঁচ টনের বেশি যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধের সাইনবোর্ড থাকলেও ব্রিজের অপর পাসে আরোয়ান নামে একটি ইটের ভাটা তা উপেক্ষা করে ভারী ট্রাকে করে জ্বালানি হিসেবে কয়লা আনা নেওয়া করতো। স্থানীরা বারবার অভিযোগ করার পরেও কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
চন্ডিপুরে আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে আসা সোহাগ শেখ বলেন, আমি কালকে বেড়াতে এসেছি আমার এক রিলেটিভের বাড়ি। ওই বাড়িতে আমার গাড়ি রয়ে গিয়েছে কিন্তু ব্রিজ টি ভেঙে যাওয়ায় গাড়ি আনতে পারছি না। গত রাতে শুনেছি কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজে উঠলে ভেঙে খালে পড়ে যায়। বর্তমান এখানের যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। আমরা চাই কর্তৃপক্ষ অতি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করবে।
স্থানীয় চকিদার আব্দুল হালিম বলেন, ২৫ টনের একটি কয়লা বোঝায় ট্রাক ব্রিজে উঠলে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে যায় শুনে সাথে সাথে চলে এসেছি। রাত চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এখন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে সন্ন্যাসী ফেরিঘাটের দিকে মানুষজন যেতে পারছে না। মানুষের আসা-যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে গাড়ি-ঘোড়া চলতে পারছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা মিরাজ মোল্লা বলেন, আমরা চাই এই ব্রিজ টি যাতে অতি দ্রুত সংস্কার করা হয়। সরকারি পদক্ষেপ নিতে অনেক দেরি হয় বিভিন্ন প্রসেসিং থাকে এ কারণে অনেক সময় লাগে কিন্তু আমরা স্থানীয় বাসিন্দারা চাই সময়কে উপেক্ষা করে যাতে অতি দ্রুত এখানে যাতায়াতের জন্য একটি সুব্যবস্থা করা হয় তাহলে এই এলাকার ৩০ হাজার মানুষ মুক্তি পাবে এবং স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা চলাচল করতে পারবে।
পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ জানান, ব্রিজ ভেঙে পড়ার বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে লোক পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি ইতোমধ্যে ফেরি বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে একটি ক্রেন এনে ব্রিজটি মেরামত করা হবে। তাছারা এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে দ্রুত বিকল্প সেতু নির্মাণ কিংবা অস্থায়ী চলাচলের কোন ব্যবস্থা না হলে আরও বড় ধরনের জনদুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।