বুধবার

২৫শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

১১ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধর্ষণ ও বিপদ রোধে ‘স্মার্ট জুতা’

বিপদে থাকা ব্যক্তির অবস্থান গুগল ম্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক শক সিস্টেম আক্রমণকারীদের প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভিনব প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বরগুনার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল সাইম। তাঁর তৈরি ‘স্মার্ট জুতা’ বিপদে সাহায্যের হাত বাড়াতে সক্ষম। এই জুতা নারীদের লোকেশন ট্র্যাকিং, এসএমএস ও লাইভ কলের মাধ্যমে দ্রুত সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি আক্রমণকারীদের প্রতিহত করতে ২৫০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক শক দিতে পারে।

জুতাটিতে রয়েছে একটি পুশ বাটন, যা শুধুমাত্র প্রয়োজনের সময় চাপা যাবে। প্রথমবার চাপলে সেট করা নম্বরে এসএমএস যাবে এবং দ্বিতীয়বার চাপলে সরাসরি কল করা সম্ভব হবে। বিপদে থাকা ব্যক্তির অবস্থান গুগল ম্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক শক সিস্টেম আক্রমণকারীদের প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

স্মার্ট জুতাটি দেশের সহজলভ্য ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি হয়েছে এবং এতে স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সিস্টেমও রয়েছে। আবিষ্কারটি করতে সাইমের প্রায় দুই মাস সময় লেগেছে, তবে জুতাটি এখনো উন্নত করার কাজ চলমান।

সাইম বরগুনার এভারগ্রিন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং ছোটবেলা থেকেই ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। তার বাবা মো. হাবিবুল্লাহ কালাম একজন স্কুল শিক্ষক এবং মা শাহনাজ আরা শারমিন গৃহিণী। আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা ছেলের স্বপ্ন পূরণে পাশে রয়েছেন।

সাইমের মা বলেন,“ছোটবেলা থেকেই সাইমের প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ। আমরা তাকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করেছি। তবে অর্থের অভাবে অনেক কাজ থেমে থাকে।”

সাইমের বাবা জানান,“ছেলের উদ্ভাবনী ক্ষমতা দেখে আমরা গর্বিত। সরকার বা কোনো প্রতিষ্ঠান যদি সহযোগিতা করে, তাহলে সাইম আরও বড় কিছু উদ্ভাবন করতে পারবে।”

বেসরকারি সংস্থা জাগোনারীর নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা হাসি বলেন,“এই স্মার্ট জুতা বাস্তবায়ন হলে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এটি বড় ভূমিকা রাখবে।”

এলাকার মানুষও সাইমের এই উদ্ভাবনকে সম্ভাবনাময় উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মনে করেন, প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে সাইমের উদ্ভাবন শুধু বরগুনা নয়, পুরো দেশেই ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।

সাইম স্মার্ট জুতার কার্যকারিতা আরও উন্নত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা সম্ভব হবে এবং দেশে নারীদের নিরাপত্তায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে।

spot_img

এ বিভাগের আরও সংবাদ

spot_img

সর্বশেষ সংবাদ