আজ ২৫ বৈশাখ, বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষের নায়ক কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী। কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরপরিবারে ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ (১৮৬১ সাল) তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মের ১৬৪ বছর পেরিয়ে গেলেও বাঙালির জীবন ও মানসে তার উপস্থিতি এখনো দেদীপ্যমান। তার লেখা ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গান বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।
রবীন্দ্রনাথের রচনায় মানুষের সব আবেগ, অনুভূতি, আকাঙ্ক্ষা, অভিব্যক্তির অতুলনীয় প্রকাশ ঘটেছে। বাঙালির সব সমস্যা-সংকটে তার গান, কবিতা জুগিয়েছে সাহস ও প্রেরণা। সবকিছু ছাপিয়ে আছে তার শান্তি, কল্যাণ ও বোধের প্রতি সুগভীর প্রত্যয় ও নিরন্তর কামনা। একেই তিনি নানা রূপে ছড়িয়ে দিয়েছেন তার বহুমাত্রিক সৃজনকর্মে। সাহিত্যে তার নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তি বাংলা ভাষা ও বাঙালির জন্য বয়ে এনেছিল বিশ্বের গৌরব। যে গীতাঞ্জলির জন্য তার এ নোবেল পুরস্কার অর্জন, সেই গীতাঞ্জলি এবং আরো অনেক বিখ্যাত রচনা বর্তমান বাংলাদেশের মাটিতেই।
এবার জাতীয় পর্যায়ে কবির স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে উদযাপন করা হবে জন্মজয়ন্তী উৎসব। এ উপলক্ষে কুঠিবাড়িতে শুরু হচ্ছে তিন দিনের জাতীয় অনুষ্ঠান। সঙ্গে থাকছে গ্রামীণ মেলারও আয়োজন। শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হচ্ছে এ আয়োজন। এবারের প্রতিপাদ্য ‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বর্ণিল এ অনুষ্ঠানমালা চলবে। এরই মধ্যে উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে বাড়ছে দর্শনার্থীদের ভিড়। অনুষ্ঠানের জন্য কুঠিবাড়ির মূল চত্বরের ভেতর মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমান।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বলেন, এ বছর কুঠিবাড়িতে জাতীয়ভাবে বিশ্বকবির ১৬৪তম জন্মোৎসব আয়োজন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। রবীন্দ্র উৎসবে দেশ-বিদেশ থেকে দর্শনার্থীরা আসেন কুঠিবাড়িতে। তাদের জন্য কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একক বক্তব্য, রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেবেন। বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে একক বক্তব্য দেবেন গবেষক ও সাহিত্য সমালোচক অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক।